ন্যানোটেক : ক্ষুদ্র প্রযুক্তির ব্যাপক বিজ্ঞান

নাফিজ আহমেদ নিলয়

Nanotechnology-The science of small


বিজ্ঞানের হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের সভ্যতা৷ এই অগ্রযাত্রায় বিজ্ঞানের প্রাণ ‘গবেষণা’র বিস্তৃতি দিনদিন হয়ে চলেছে বৃহৎ থেকে বৃহত্তর৷ তবে একই সাথে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হচ্ছে গবেষণার বিষয়৷অসীম মহাশূন্যে পাড়ি দেয়ার পাশাপাশি অতিক্ষুদ্র অনুর ভেতর লুকায়িত কোনো বৃহৎ জগতের খোঁজও চলছে সমান তালে৷এই অতিক্ষুদ্র পরিসরে গবেষণার তাগিদে মাইক্রো থেকে এখন ন্যানো'র দিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চোখ৷আজকাল উন্নত বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণায় খুব নামডাক শোনা যাচ্ছে ন্যানো প্রযুক্তির৷
ন্যানো শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ nanos থেকে যার অভিধানিক অর্থ dwarf বা বামন৷ কিন্তু এখানে এটি পরিমাপের একক হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে৷ এর সহজ উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এক মিটারের ১০০ কোটি ভাগের এক ভাগ হলো এক ন্যানোমিটার৷ আর এ ন্যানোমিটারের সাথে যে সমস্ত টেকনোজি বা প্রযুক্তি সম্পর্কিত সেগুলোকেই মূলত ন্যানো টেকনোলজি সংক্ষেপে 'ন্যানোটেক' বলা হয়ে থাকে৷ ১৯৫৯ সালের ২৯ জানুয়ারি আমেরিকান পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যান সর্বপ্রথম ন্যানোপ্রযুক্তি ধারণা দেন৷আজকের বিশ্বে বিজ্ঞানের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ এবং দ্রুত চলমান এলাকাগুলির একটি এই ন্যানোপ্রযুক্তি৷


Nanotechnology

A nanometre is one-billionth of a metre,ten times the diameter of a hydrogen atom. The diameter of a human hair is,on average, 80,000 nanometres.


বিজ্ঞানের প্রায় সকল প্রায়োগিক শাখায় ন্যানোপ্রযুক্তির ব্যবহার দিনদিন বাড়ছে৷ মরণব্যাধি ক্যান্সার চিকিৎসা, উন্নত ঔষধ ও মেডিকেল ডিভাইস, গৃহস্থলিতে ব্যবহৃত পণ্য, পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তি, সবুজ জ্বালানি, হেলথ কেয়ার পণ্য, নির্মান সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরণের উন্নতমানের হালকা, টেকসই, পরিচ্ছন্ন, মূলসাশ্রয়ী ও দীর্ঘস্থায়ী শিল্পপণ্য তৈরীতে এখন ন্যানোটেক ব্যবহৃত হচ্ছে৷আমাদের প্রাত্যহিক বহুল ব্যবহৃত ডিজিটাল ডিভাইস সমূহে ন্যানোপ্রযুক্তির গুরুত্ব অনস্বিকার্য৷ এছাড়াও ন্যানো জীবপ্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, বায়োইঞ্জিনিয়ারিং, ন্যানো ডিভাইস, মেশিন ও টেকনোলজিতে এখন ব্যাপক হারে ন্যানোটেক ব্যবহৃত হচ্ছে৷ন্ যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষকলা সহজে ধ্বংস করা যায়৷


Nanotechnology

এ প্রযুক্তি ব্যবহারে মোটর ইঞ্জিনে তাপীয় শক্তি অনেক কম খরচ হয়৷
বলা হয়, “There is no unmixed good on earth.”৷ ন্যানোটেকনোলোজির অদক্ষ ব্যবহার মারাত্মক স্বাস্থঝুঁকির কারণ হতে পারে৷এ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলস্বরূপ অদক্ষরা ক্রমশ কর্মহীন হয়ে পড়বে৷ ন্যানোপ্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা ও প্রয়োগ অনেক ব্যয়বহুল৷

২০১৬ সালের ৫ই অক্টোবর ফ্রান্সের পিয়েরে শোভেজ, ইংল্যান্ডের স্যার ফ্রেজার স্টুডার্ট, নেদারল্যান্ডের বার্নার্ড এল ফেরিঙ্গা ন্যানোটেকনোলোজির উৎকর্ষ সাধন ও অন্যান্য কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ রসায়নে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন৷